আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ, শুধু একটা নাম না, একটা ব্র্যান্ড।



আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ এই নামটাই যথেষ্ট বেদাতীদের বুকে কম্পন ধরানোর জন্য। বাংলাদেশ তো হাজার খানেক বক্তা রয়েছে। যারা মাদ্রাসায় পড়ছে তারা বক্তব্য দিচ্ছে যারা মাদ্রাসায় পড়ে নি তারাও দিচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে এত হাজারখানেক বক্তার মাঝে আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ কেন আলাদা? লোক টাকে আপনি ঘৃনা করতে পারেন, লোকটাকে আপনি ভালোবাসতে পারেন কিন্তু এই লোকটাকে আপনি কখনো এড়িয়ে যেতে পারবেন না। ঘূর্ণিঝড় যখন আসে তখন কেউ ঘরের বাইরে থাকে, কেউ ঘরের ভিতর। কেউ ঘূর্ণিঝড় আসায় কষ্ট পায় আবার কেউ আনন্দিত হয় তবে কেউ এড়াতে পারে না।

লোকটা ১৯৯০ সাল থেকে বক্তব্য দিচ্ছেন শুরুতে যখন উনি বলতেন যে সালাতের পর সম্মিলিত মোনাজাত বেদাত, মিলাদ পড়া বেদাত, চল্লিশা-চারদিনের সিন্নি করা বেদাত তখন ওই সময় একদল লোক ছিল যারা আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ এর মঞ্চে ঢিল ছুড়ে মেরেছেন, অপমান অপদস্থ করেছেন গালিগালাজ করেছেন। প্রতিটা পদে পদে তিনি তিরস্কৃত হয়েছেন। আজ এখন বর্তমান সময় দেখুন আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ এই গত পাঁচ ছয় বছর আগেও যিনি তার কথার জন্য প্রচুর সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছেন আজ পাঁচ বছর পরে এসে হানাফিরাও স্বীকার করেন যে সালাতের পর সম্মিলিত মোনাজাত বেদাত মিলাদ পড়া বেদাত , কদমবুসি করা শির্ক।

যারা সমালোচনাকারী তারা তো শুরু থেকেই সমালোচনা করছেন। একেবারে ১৯৯০ সাল থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ এর সমালোচনা আর সমালোচনা । ইন্টারনেট ঘাটাঘাটি করলে দেখবেন, ফেসবুকের ঘাটাঘাটি করলে দেখবেন আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফকে কি গালিগালাজ। সুন্নিদের ওয়াজের মঞ্চে আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফকে নিয়ে কি অশালীন কথাবার্তা ওনার নামটাকে উনার নাম যেটা কিনা আব্দুর রাজ্জাক; রাজ্জাক কিন্তু আল্লাহর নাম আর ইউসুফ আলাইহিস সালাম একজন নবীর নাম এই দুইটা নাম মিলে উনার নাম তৈরি হয়েছে আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ অথচ বেদাতিরা আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ শব্দটাকে ব্যঙ্গ করে আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফকে গালি দিতে গিয়ে রাজ্জাক শব্দকে ব্যঙ্গ করে কাজ্জাব এবং ইসলামের একজন সম্মানিত নবীর নামকে তারা ব্যঙ্গ করে ইবলিশ বললো নাউজুবিল্লাহ।

কি আর করবে সত্য যখন এত বছর ধরে ঠেকাতে পারল না তখন এই সময় এসে কিভাবে আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফকে ঠেকাবে। সত্য যখন মিথ্যার সামনে এসে দাঁড়ায় তখন মিথ্যা টিকতে পারে না। আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ যখন বলল যে কোরআনের ভেতরে বিদআত। কিভাবে? কুরআনের একেবারে শেষ পাতাটায় দোয়ায়ে খতমূল কুরআন নামের একটা দোয়া আছে সেটা বেদাত। কোন বাপের বেটা বা মায়ের বেটা বলে না কেন যে এটা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর শেখানো দোয়া। কথাটা শুনতে খুব খারাপ লাগে আচ্ছা এটা কেমন কথা! ছোট বেলা থেকে যে দোয়াটা পড়ে আসছি কোরআন মাজীদ খতম করার পরে যে দোয়াটা আমরা সর্বদা পড়ি আজকে ২২ বছর পরে; জীবনের বাইশটা বছর পরে এসে আমরা জানতে পারি যে এটা কিনা একটা বেদাত! না! আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ তো ঠিক বলছে না। তার কথা আমি মানতে পারলাম না । কোরআন শরীফে এত বড় বেদাত থাকতে পারে? কিন্তু দিনশেষে দেখা যায় ওই যে আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ বলেছেন যে দোয়ায়ে খতমূল কোরান বিদআত কোন বাপের বেটা থাকলে প্রমাণ করুক আসলেই কোন বাপের ব্যাটা নেই যে প্রমাণ করবে দোয়ায়ে খতমুল কোরআন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর সেখানে দোয়া। কই কত যে ভিডিও দেখি! কত যে ভিডিও দেখি আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ এর নামে কত সমালোচনা!কই কেউ এটা বলে না কেন যে আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ বলেছেন যে কোরআন মাজিদের শেষে লেখা দোয়ায় খতমুল কোরআন বেদাত উনি মিথ্যা বলেছেন এবং উনার সেই কথাটা শুধরে দিচ্ছেন এমন কোন বেদাতি আলেম দেখলাম না কেন?

একটা কথাই বলবো যে আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ এখন যে অবস্থানে আছে আপনার মত কিছু বেদাতী হুজুর তার কিছু করতে পারবেন না আপনি যখনই আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ এর সমালোচনা, নিন্দা করতে যাবেন তখনই তার ছাত্ররা আপনার সাথে এ নিয়ে কথা বলতে চাইবে এবং আপনি সে কথায় না পেরে আপনি পালাতে বাধ্য হবেন এটা আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ এর এত বছরের পরিশ্রমের ফল।

আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ এর পুরো পরিবারটা ইসলামিক শিক্ষা দ্বারা পরিপূর্ণ। প্রতিটা সন্তানকে তিনি মানুষের মতো মানুষ করেছেন। আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাজ্জাক এর ব্যবহার, ভদ্রতা, সভ্যতা দেখেছেন! বেদাতিদের মুখের ভাষার যা অবস্থা আস্তাগফিরুল্লাহ তাদের বলব আপনারা আহলে হাদিস আলেমদের থেকে কিছু ব্যবহার শিখে নিন। আপনি আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ হাফিজাহুল্লাহর কাছ থেকে ব্যবহার শিখে নিন, আপনি আবু বকর জাকারিয়া হাফিজাহুল্লাহ থেকে নিন।

অবশেষে একটা কথাই বলবো যে আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ এর বক্তব্য শুনে এদেশের মাটিতে হাজার হাজার যুবক দ্বীনের পথে ফিরে এসেছে , হাজার হাজার যুবক টাখনুর উপরে কাপড় তুলেছে আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ এর এক ধমকে নারীরা তাদের মাথায় পর্দা দিয়েছে। আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ এর এক ধমকে যুবক তার নেশা ছেড়ে দিয়েছে। এত সহজে শুধুমাত্র কেচ্ছা-কাহিনী বলে এত ভালবাসা এত জনপ্রিয়তা এবং মানুষের মধ্যে এত বিপ্লবী ভাবে পরিবর্তন সেটা কখনো লক্ষ্য করা যায় না।

ওয়াজ মাহফিলে বক্তব্য দেওয়া একদম সহজ আবারও বলছি ওয়াজ মাহফিলে বক্তব্য দিতে কোন যোগ্যতা লাগে না একদম পানির মত সহজ । আপনাকে শুধু একটা বিষয় দক্ষতা থাকতে হবে সেটা হলো বাকপটুতা। আপনাকে কথা বলতে হবে স্মার্টলি তাহলে দেখবেন আপনি দেড় ঘণ্টায় কত কথা বলবেন অথচ আপনার কোরআনের শিক্ষাও নেই হাদিসের শিক্ষাও নেই অথচ আপনি দেড় ঘন্টা কিছু না কিছু বলে বক্তব্য করেছেন। এই বক্তব্যতে কোন হেদায়েত নেই।

বক্তব্য সবাই দেয় কিন্তু ১০ মিনিটে পাঁচটা হাদিস কজন বক্তা বলে আপনি আমাকে দেখান । আমি এটা বলছি না শুধুমাত্র আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফই একমাত্র ব্যক্তি যিনি ১০ মিনিটে পাঁচটা হাদিস বলে। মাশাল্লাহ অনেক আহলে হাদিস বক্তারাও অনেক হাদিস বলে থাকে কম সময়ের মধ্যে। আপনারা যারা আহলে হাদিস এর নিন্দা করেন আহলে হাদিস নন আমি তাদের কাছে প্রশ্নটা করছি যে আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ এর যে এত সমালোচনা করেন আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ এই আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ সেই । তাহলে আপনাকে প্রশ্ন করছি আপনার হুজুর এই যে দেড় ঘন্টা আলোচনা করলো তার মধ্যে কয়টা হাদিস শ্রোতাদের শেখালো কয়টা কোরআনের শিক্ষা বক্তা শ্রোতাদের শেখালো । সেটা আপনাকে প্রশ্ন করছি।

জাযাকাল্লাহ।

আরো পড়ুন: যারা বলে আহলে হাদিসরা ডলার খায়।

আমাদের আহলে হাদিস ভাইদের উচিত সবার সাথে তর্কে না জড়ানো।

মন্তব্যসমূহ